শেষ হল
বাংলা উৎসব ২০১১
ভোপালের রবীন্দ্রভবন প্রাঙ্গণে বাংলা উৎসবের সমাপ্তি হল গত ২২শে মে-র এক মনোরম সন্ধ্যায়। একগুচ্ছ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শ্রী বারিদবরণ ঘোষের মননশীল আলোচনা, বাংলার হরেক রকম হস্তশিল্প উৎপাদের মনোহারি প্রদর্শনী, পশ্চিমবঙ্গ থেকে নিয়ে আসা রন্ধনশিল্পীদের হাতের তৈরি সুস্বাদু খাবার-সব মিলিয়ে উৎসব প্রাঙ্গণ ছিল জমজমাট।
বাংলা উৎসব ২০১১-এর আয়োজক ছিলেন এম পি বঙ্গীয় পরিষদ, অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল গত ২০শে মে।
সংগঠকদের মধ্যে প্লেনারি কমিটি প্রথমদিন উদবোধনী অনুষ্ঠানে প্রস্তুত করলেন একটি গবেষণা মূলক অডিও-ভিসুয়্যাল বৃত্তচিত্র ‘মধ্যভারতে বাঙ্গালি-সেকাল ও একাল।’ মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান এবং বিশিষ্ঠ সাংবাদিক-বিধায়ক চন্দন মিত্রের উপস্থিতিতে শ্রীচৈতন্যদেব থেকে শুরু করে হালফিলের বন বিশেষজ্ঞ জে জে দত্ত--মধ্যপ্রদেশ গঠনে সবার অবদান বিবৃত করলেন সংগঠকেরা। এইদিন পরিবেশিত হল জয়া আচার্যর একল নৃত্য, কাকলি সরকারের একল সঙ্গীত, অনুরেখা ঘোষের নির্দেশনায় পরিবেশিত হল ‘বাসন্তী’।
দ্বিতীয় দিনে একটি মনোজ্ঞ আলোচনা সভায় অংশ নিলেন বিশিষ্ট অধ্যাপক এবং প্রাবন্ধিক শ্রী বারিদবরণ ঘোষ। আলোচনার বিষয় ছিল ‘ভ্রমণ পিপাসু বাঙালি’। উপস্থিত ছিলেন প্লেনারি কমিটির প্রধান অনুপ ঘোষ, দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য সহ অন্যান্যরা। অন্যদিকে সাংস্কৃতিক মঞ্চে কবিগান পরিবেশন করলেন বাঁকুড়ার গনেশ ভট্টাচার্য ও তাঁর শিল্পীরা, ছোটদের দিয়ে নৃত্যের মাধ্যমে তপতী দাসগুপ্ত এবং মিনাকি গাঙ্গুলির নির্দেশনায় পরিবেশিত হল বাংলার লোকগান ‘আ মরি বাংলা ভাষা’। পরবর্তি অনুষ্টান ছিল বিদূষী পূর্ণিমা চৌধুরীর অপূর্ব সঙ্গীতের পরিবেশনা। এইদিনের শেষ পর্বে হিন্দমোটরের শিল্পী দলের নৃত্যনাট্য প্রযোজনা ‘পথের শেষ কোথায়’।
এবছরের বাংলা উৎসবের অন্যতম বিশেষ আকষর্ণ ছিল ‘রবীন্দ্র-ধারা’। বিশ্বকবির জন্মের সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনার বিভিন্ন বিষয়কে নিয়ে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন উদ্যোক্তারা। রবীন্দ্রসঙ্গীত, রবীন্দ্রকবিতার আবৃত্তি, এবং শিক্ষাক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের অবদান বিষয়ক আলচনায় উংশ নিয়েছিল অনেকেই। ২২শে মে, বাংলা উৎসবের শেষ সন্ধ্যায় সেই সব সফল প্রতিযোগীদের পুরষ্কৃত করা হল। এরপর স্থানীয় আরেরা বঙ্গীয় পরিষদের প্রযোজনায় মঞ্চস্থ হল সাহিত্যসম্রাট বঙ্কীমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত এবং সরিত চট্টোপাধ্যায় নির্দেশিত একটি ছোট নাটিকা ‘কমলাকান্তের জবানবন্দী’। বিশিষ্ঠ সঙ্গীতশিল্পী শম্পা কুন্ডু পরিবেশন করলেন বিভিন্ন স্বাদের কিছু নতুন-পুরোনো গান এবং শেষ পর্যায়ে বনানী চক্রবর্তির নির্দেশনায় পরিবেশিত হল নৃত্যনাট্য ‘তাসের দেশ’।
বাংলা উৎসব এ বছরের মতন শেষ হল। কিন্তু আসল বাংলা কতটা উঠে এলো তার বিশ্লেষণ করার মতন সময়ও উদ্যক্তাদের খুব তাড়াতাড়িই বের করে নিতে হবে। আগামি বছরের প্রস্তুতি শুরু করার পক্ষে এর থেকে উপযুক্ত সময় আর পাওয়া যাবে কি?
If this report is not readable in your computer, download Bangla font from here :http://www.omicronlab.com/bangla-fonts.html